মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম ( লাইসেন্স নবায়ন )
অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়মআসসালামু আলাইকুম, আপনি কি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম খুজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনার কাঙ্খিত প্রশ্ন উত্তরটি জানতে পারেননি। তাহলে আপনি এখন সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম বলে দেওয়া রয়েছে।
আমি অনেক দিন ধরে খেয়াল করে দেখছি মানুষ গুগলে সার্চ করছে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম। তাদের কথা চিন্তা করে সঠিক তথ্য জানানোর জন্য এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে পড়লে বুঝতে পারবেন।
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম - মূলভাব
আমাদের বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কিন্তু মোটরসাইকেল পছন্দ করে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার মোটরসাইকেল বিক্রয় করা হয়। তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন বাঙালি কত মোটরসাইকেল পাগল। অনেকে যারা নতুন মোটরসাইকেল কেনার চিন্তা ভাবনা করছেন।
তারা অবশ্যই কেনার পূর্বে ভালোভাবে কোন মোটরসাইকেলটি ভালো হবে এই বিষয়টি চিন্তাভাবনা করবেন। সবকিছু দেখে শুনে সিদ্ধান্ত নেন কোন মোটরসাইকেলটি পারফেক্ট হবে। মোটরসাইকেল কেনার পর সর্বপ্রথম উচিত হবে মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করে নেওয়া।
এর পাশাপাশি একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করা। কারণ আপনি মোটরসাইকেল নিয়ে যেখানে সেখানে যাতায়াত করবেন তখন পুলিশ আটকাতে পারে। তখন লাইসেন্স দেখে পুলিশের থেকে ছাড়া পেতে পারেন। যারা নতুন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার সময় বিভিন্নভাবে দালালের জিম্মি হয়ে।
অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়।বাংলাদেশ সরকার খুব সহজেই যেন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারে এদিকে ভালোভাবে খেয়াল করে। কিন্তু কিছু লোভী মানুষেরা এ সকল কিছুকে সিন্ডিকেট এ পরিণত করেছে। এইসব বিষয়ের জন্য গ্রাহককে অনেক হয়রানির স্বীকার হতে হয়। আমি আজকে আপনাদেরকে এমনভাবে কিছু ধাপ বলে দিব।
এই নিয়মে খুব সহজে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে পারবেন। তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় অযথা নষ্ট না করে মূল আলোচনার দিকে ফিরে যাই।
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন কেন করবেন
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় প্রতিদিন শত শত মোটরসাইকেল আটক করা হয়। আপনি কি জানেন ? এই মোটরসাইকেল গুলোর সরকারের দপ্তরে নেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সঠিক নিয়মে কাগজপত্র না থাকা। আবার মালিকের লাইসেন্স না থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের মামলা খেতে হয়।
আপনি যখন থানার আশে পাশে দিয়ে যাবেন তখন পুলিশেরা কিন্তু চেকপোস্ট বসাই। সেখানে আপনার মোটরসাইকেল যদি ধরে এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জানতে চাই তাহলে অবশ্যই কাগজটি দিতে হবে। কাগজ না দেখালে এর বিপরীতে আপনার মোটরসাইকেলের উপর মামলা দিতে পারে।
হয়তো বা মোটরসাইকেল নিয়ে সরকারের দপ্তরে জমা দিতে পারে। উক্ত সময় মোটরসাইকেল ছাড়িয়ে নিতে চান তাহলে অবশ্যই এর বিনিময়ে সরকারকে কিছু টাকা দিতে হবে। এবং মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হবে। সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে হবে।
এটার মূল কাজ হচ্ছে, মোটরসাইকেলটি আসলেই কি আপনার এটা প্রমাণের জন্য। এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আপনার মোটরসাইকেলটি চলছে, না আইন লঙ্ঘন করছে, এগুলো বিষয়ের জন্য একটি রেজিস্ট্রেশন অত্যন্ত জরুরী।
বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার নিয়ম
বাইকের ট্যাক্স টোকেন সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত হচ্ছে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন যখন করবেন তখন সেখান থেকে দুই বছরের জন্য চলার মত করে একটি ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে পারেন। দ্বিতীয়ত হচ্ছে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার পর ট্যাক্স টোকেন এর মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত করতে পারবেন।
দুই বছরের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য কয়েকটি ধাপ মেনে কাজ করতে হবে। কিছুদিন আগে থেকেই ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য বি আর টি এ অফিসে যেতে হতো। তবে বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী বি আর টি এ এর আওতাভুক্ত যে সকল ব্যাংক রয়েছে সেখানে গিয়েই এই কাজটি করতে পারবেন।
সব ব্যাংকে কিন্তু এ সকল কাজ করার অনুমতি নেই। তবে বেশ কিছু ব্যাংক রয়েছে যা আপনাদেরকে সাহায্য করতে পারে। যেমন ধরুন আল আরাফা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এর পাশাপাশি আরও কিছু ব্যাংক রয়েছে। সেগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। আপনাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিল করার নিয়ম।
সেটি হচ্ছে দশ বছর বাইকের টেক্স টোকেন উত্তীর্ণ হওয়ার পর। আপনি মনে করেন রাস্তায় চলাচলের জন্য পুলিশ আর কোন মামলা দিবে না। এটা সম্পূর্ণই আপনার ভুল ধারনা। সে ক্ষেত্রে ফ্রি ট্যাক্স টোকেন পাবেন এর জন্য আপনাকে বি আর টি এ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদনহীন চলাফেরা করলে সমস্যায় পড়তে পারেন।
এই কাজটি করার জন্য বি আর টি এ অনুমোদিত যে সকল ব্যাংক রয়েছে সেখান থেকে একটি ট্রানজেকশন নাম্বারের প্রয়োজন পড়ে। এই নাম্বারটি নেওয়ার জন্য ২৩ টাকা খরচ করতে হবে। এরপর ট্যাক্স টোকিনের একটি ফটোকপি বি আর টি এ অফিসে জমা দিতে হবে। এবং ব্যাংকে বলতে হবে ট্যাক্স টোকেন বাবদ ২৩ টাকা জমা নিতে।
এরপর ব্যাংক থেকে ট্রানজেকশন নাম্বার দিবে। আপনার গাড়িটি যেই বি আর টি এ অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, সেখানে গিয়ে ট্যাক্স টোকিনের কপি দিবেন এরপর রাস্তায় চলাচল করার জন্য একটি রোড পারমিট দিবে। এরপর থেকে কোন ফ্রি ছাড়াই যাতায়াত করতে পারবেন।
মোটরসাইকেল ট্যাক্স টোকেন নবায়ন ফি কত টাকা
আপনাদের অনেকেরই মতপার্থক্য রয়েছে যে মোটরসাইকেল ট্যাক্স টোকেন নবায়ন ফ্রি কত টাকা। এবং এই ফ্রি এর সাথে অন্যান্য কোন চার্জ যুক্ত হয়েছে কি না। তবে বিভিন্ন সময় দালালের খপ্পরে পড়ে অনেক গ্রাহককে হয়রানি শিকার হতে হয়েছে এবং অনেক টাকা দিতে হয়েছে। দুই বছরের জন্য যে টোকেন রিনিউ করবেন এর জন্য ২৩০০ টাকা ফ্রি দিতে হবে।
এবং এটার সাথে নতুন আরো একটি ফ্রি যোগ হয়েছে। কন্ট্রোভিয়াল ফাইনাল এসেন্সিয়াল ফান্ড, এটার জন্য এককালীন সময়ের ক্ষেত্রে ১১০০ টাকা ফ্রি দিতে হবে। মোটরসাইকেল এর জীবনকালে শুধুমাত্র একবার এই ফ্রি দিলেই হবে। এরপর ১০ বছরের টেক্স টোকেন নবায়ন করতে চাইলে শুধুমাত্র ২৩০০ টাকা দিতে হবে।
এর পাশাপাশি কন্ট্রোভিয়াল ফাইনাল এসেন্সিয়াল ফান্ড, বাবদ আরো ১১০০ টাকা দিতে হবে। কাজগুলো সম্পন্ন করার পর পরবর্তী ৫ বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন নবায়ন কপি আপনাকে দিবে। যাদের বাইক অনেক পুরাতন এবং ডিজিটাল নাম্বার প্লেট নাই।
তাদেরকে ডিজিটাল নাম্বার প্লেট এর জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হবে। ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের মূল্য ২২৬০ টাকা। এবং ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের মূল্য ৫৫০ টাকা।
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম
বাইকার বন্ধুরা আপনারা যারা বাংলাদেশে মোটরসাইকেল চালান। এবং যত দামি বাইক হোক না কেন বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে বাইক কেনার ১০ বছর পর্যন্ত একটি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সরকারকে ট্যাক্স দিতে হবে। ১০ বছর যখন পার হয়ে যাবে, তখন আপনার জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে।
১০ বছরের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি একসাথে যদি হিসাব করা হয় তাহলে অনেক টাকা হয়। তবে সকলের কথা চিন্তা করে দুই বছর পর পর রেজিস্ট্রেশন এর মেয়াদ বৃদ্ধি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার জন্য বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক জায়গায় ঘুরতে হয় এবং অনেক পরিশ্রম করতে হয়।
আরও পড়ুনঃ সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন পত্র লেখার নিয়ম।
রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বাড়াতে হলে বর্তমান সময়ে বি আর টি এ অফিসে যেতে হবে না। সর্বপ্রথম রেজিস্ট্রেশনের সময় বি আর টি এ অফিসে যেতে হবে কিন্তু পরবর্তী থেকে আপনি নিজেই রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে পারবেন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির কিছু নির্দিষ্ট ব্যাংক রয়েছে।
সেখানে সরকারি বিষয়ে কোনো টাকা জমা দিলে সরাসরি টাকাটি সরকারি কোষাগরের জমা হয়। এখন মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার জন্য আপনি বাংলাদেশের যে অঞ্চলে থাকুন না কেন। শুধুমাত্র "এন আর বি সি" ব্যাংকের সহযোগিতায় খুব সহজেই রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে পারবেন।
এই প্রসেসটি খুবই সহজ প্রথমত রেজিস্ট্রেশন এর কপি নিয়ে যেতে হবে এরপর ব্যাংক এ জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিতে হবে এরপর আরোও একটি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিবে। এভাবেই কিন্তু খুব সহজেই আপনি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
মোটরসাইকেলের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য কি কি লাগে
ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য কিছু কাগজপত্র লাগবে এবং কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমত একটি মোটরসাইকেল থাকতে হবে। এরপর মোটরসাইকেল এর কয় বিক্রয়ের কাগজ। তারপর ড্রাইভিং লাইসেন্স। পুরাতন বাইক কিনলে আগের মালিকের থেকে কেনার কাগজের ফটোকপি।
পূর্বের রিনিউ পত্রের ফটোকপি। কাস্টম কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব সংস্থার রশিদ। এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা যা ফ্রি বাবদ ধরা হয়েছে। যত বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করবেন এর জন্য কাঙ্খিত ফ্রি দিতে হবে। মোটরসাইকেলের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য এ সকল কাগজ অবশ্যই নিজের কাছে রাখতে হবে।
মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করার নিয়ম
বর্তমান সময়ে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার জন্য খুব একটা কষ্ট করতে হবে না। মোটরসাইকেল যেখান থেকে কিনবেন অর্থাৎ শোরুম থেকে যে সকল কাগজপত্র দিবে। এই কাগজগুলোর সাথে আপনার ব্যক্তিগত কিছু কাগজপত্র যোগ করলে এবং কিছু ধাপ অনুযায়ী কাজ করলে খুব সহজেই মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করতে পারবেন।
শোরুমের কাগজের সাথে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি যুক্ত করতে হবে। এরপর অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। লাইসেন্সের জন্য যে টাকা বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারের জমা দিয়েছেন অর্থাৎ ব্যাংক স্টেটমেন্ট রাখতে হবে। কাগজগুলো একসঙ্গে করার পর বি আর টি এ অফিসে যেতে হবে।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে এরপর অফিস থেকে একজন পরিদর্শক আসবে। আপনার কাগজপত্র এবং বাইক ভালোভাবে দেখবে। এরপর কাগজপত্র স্বাক্ষর করে দিবে। এবং অন্য একটি অফিসে যেতে বলবে।
সেখানে গিয়েও স্বাক্ষর করাতে হবে এবং পরবর্তী আরোও একটি জায়গায় যেতে হবে। এরপর যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এভাবেই খুব সহজেই মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে পারবেন।
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম - শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করার নিয়ম। এবং কিভাবে নবায়ন করতে হয় এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর গুলো জানতে পেরেছেন।
আপনি নিত্যনতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যদি প্রতিনিয়ত পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখবেন। আপনার নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুর সুবিধার্থে পোস্টটি তাদের কাছে শেয়ার করে দিন। এখানে এমন কিছু তথ্য শেয়ার করা হয় যা একজন মানুষের প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।
এস এইচ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url