শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় বিস্তারিত জেনে নিন ?
শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতাআসসালামু আলাইকুম, আপনি কি শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে কিছু সঠিক তথ্য খুজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরটি এখনো পর্যন্ত জানতে পারেননি। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। এখানে শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আমি বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করে দেখছি শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় এটা নিয়ে মানুষ গুগলে সার্চ করে। তাদের কথা চিন্তা করে এবং তাদেরকে সঠিক তথ্য জানানোর জন্য আজকের এই ব্লগটি তৈরি করা হয়েছে।
শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় - মূলভাব
শিমুল মূল এই কথা বাংলাদেশের প্রায় সকল মানুষই জানে। বিভিন্ন জটিল এবং কঠিন রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারেরা এই শিমুলের মূল খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা এটার সাথে বেশি পরিচিত। কেননা তাদের এলাকায় যেখানে সেখানে এটি জন্ম হতে পারে। এর পাশাপাশি যারা শহরে থাকে।
আরও পড়ুনঃ পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক এবং উপকারিতা।
তারা এই গাছগুলো বেশি হয়তো বা দেখেনি কিন্তু দোকানে গিয়ে শিমুলের মূল পাউডার অথবা শুকনো এগুলো কিনে খেয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমান সময়ে শিমুলের মূল অনেক কমে গিয়েছে কেননা কৃষি জমি এলাকা এবং বন জঙ্গল নষ্ট করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। অনেকের লাগায় দেখা যায় তারা বাণিজ্যিকভাবে শিমুলের মূল চাষ করে থাকে।
যারা এ গাছ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেনা তারা এই গাছকে শুধুমাত্র তুলা গাছ হিসাবে চিনে থাকে। কিন্তু এই গাছের ঔষধি গুণাবলি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। এই গাছটি যখন ছোট থাকে তখন এই গাছের মূল ব্যবহার করা হয় এবং যখন গাছটি অনেক বড় হয় তখন এই গাছের আঠা, কাটা এবং তুলা ফুল এগুলো সব ওষুধের কাজে ব্যবহার করা হয়।
শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয়
তো আজ আপনাদের সাথে শুধুমাত্র শিমুল গাছের কাঁচা মূল নিয়ে কথা বলবো। ভেষজ চিকিৎসা মতে শিমুল গাছের এই মূলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। এবং এটা নিয়ে অনেক রিসার্চ করা হয়েছে। অনেক ডাক্তারেরা এটাকে ভায়াগ্রা এর সাথে তুলনা করে থাকে। যদিও এটা ভায়াগ্রার মতো দ্রুত কাজ করে না।
তবে এটা সত্যি যে এই শিমুল গাছের কাঁচা মূল অনেক কার্যকরী। এই বস্তুটি ন্যাচারাল হওয়ার কারণে একজন সাধারণ মানুষের শরীরে ধীরে ধীরে এর প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের শরীরে এর প্রভাব পড়তে সর্বনিম্ন ৩০ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। শিমুল মূল পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যই কাজ করে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের সময় এবং বিভিন্ন সমস্যায় এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ব্যাথাযুক্ত ঋতুস্রাব এবং অতিরিক্ত ঋতুস্রাব বন্ধে শিমুল মূলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌন সমস্যার অন্যতম ওষুধের নাম শিমুল মূল। এটি একজন দুর্বল পুরুষের যৌন দুর্বলতা দূর করতে সক্ষম।
আরও পড়ুনঃ সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম জানুন।
এর পাশাপাশি শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং পুরুষের শুক্রাণু সংখ্যা অধিকহারে বৃদ্ধি করে। সহজ কথায় আপনারা অনেকে বলেন বীর্য তরল হয়ে গিয়েছে দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে, উত্তেজনা কমে গিয়েছে। এবং অনেকেই বলেন প্রসাবের সাথে বীর্য ক্ষয় হচ্ছে এই সকল সমস্যার ক্ষেত্রে শিমুল মূল অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
এক কথায় সুন্দর এবং সুস্থ যৌন জীবনের জন্য শিমুল মূল অত্যন্ত উপকারী। একজন মানুষের সাধারণত যে ধরনের সমস্যা প্রতিনিয়ত দেখা যায় সর্দি-কাশি, জ্বর এগুলো থেকে দেহকে সুস্থ রাখে। এর পাশাপাশি যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে এবং লিভারের সমস্যা রয়েছে।
ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ দিন শিমুল সেবন করলে এই সমস্যাটি দূর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।কাঁচা অবস্থায় যদি শিমুল মূল খাওয়া হয় তাহলে এর ভিতরে থাকা যে সকল পদার্থ রয়েছে এগুলো আমাদের শরীরে অনেক ভালো প্রভাব বিস্তার করে।
আরও পড়ুনঃ বড়ই পাতার উপকারিতা জেনে নিন।
সকল মানুষদের চোখে দেখার সমস্যা হয় রাতে দেখতে সমস্যা হয়। এবং প্রতিনিয়ত চোখ দিয়ে পানি বের হয়।এক কথায় বলে গেলে চোখের যে সকল সমস্যা রয়েছে এগুলোর সমাধান হিসেবে শিমুল মূল একেবারে উপযুক্ত। প্রতিনিয়ত এটি নিয়ম করে খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ ভালো হয়ে যায়।
শিমুল মূলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যে সকল জিনিসের ভালো গুনাগুন রয়েছে এর পাশাপাশি খারাপ কিছু দিক রয়েছে। ঠিক তেমনি এই শিমুল মূল। এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ খারাপ দিক রয়েছে এগুলো মানুষের শরীরকে অনেক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। সচরাচর এটি সেবন করার সঠিক নিয়ম না জানার কারণে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
শিমুল মূল একটি প্রাকৃতিক ঔষধ হওয়ার কারণে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই কম। কেননা এখানে তেমন কিছু খারাপ গুনাগুন নেই যা মানুষ এর বড় কিছু ক্ষতি করবে। কিন্তু যাদের এলার্জি এবং চুলকানি রয়েছে এবং শরীর বেশি জ্বালাপোড়া করে। তাদের এই শিমুল মূল এড়িয়ে চলাটাই বেশি ভালো হবে।
আরও পড়ুনঃ অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়।
এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি করতে একেবারে পারফেক্ট। আপনি যেই প্রাকৃতিক ঔষধ সেবন করুন না কেন সর্বপ্রথম আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে। ভালোভাবে পরামর্শ না করলে পরবর্তীতে কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এই শিমুল মূলের বেশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বের করতে পারেনি শুধুমাত্র এই দুই থেকে তিনটা ছাড়া। যারা ১৮ বছরের কম বয়স তারা এই শিমুল মূল থেকে বিরত থাকবেন। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে লাভের আশায় শুধুমাত্র কচি শিমুল নিয়ে ব্যবহার না করে শক্ত হয়ে যাওয়া মূলক কিন্তু পাউডার হিসেবে বাজারজাত করে।
তাই আপনার উচিত হবে বিশ্বাস তো কোন দোকান থেকে ক্রয় করা। আপনি চাইলে নিজের সংগ্রহ করে রাখতে পারেন।
শিমুল মুল খাওয়ার সঠিক নিয়ম
শিমুল মূল খাওয়া নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই কিন্তু আপনাদের সুবিধার্থে এমন একটি নিয়ম বলবো এই নিয়ম মেনে চললে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল দেখতে পারবেন। চারা শিমুল গাছের মূল কথা যে কাজটি চার থেকে পাঁচ হাত লম্বা হয়েছে এই সমপরিমাণ একটি গাছ সর্বপ্রথম সংগ্রহ করে নিবেন। এরপর বাড়িতে এনে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন।
এবং উপরের অংশ এবং নিচের অংশ ভালোভাবে কেটে পরিষ্কার করবেন। এরপর শিমুল মূলে থাকা যেই বাকল রয়েছে বাকলটি তুলে ফেলে দিবেন। ছোট ছোট দুটো টুকরা করবেন এবং এটি বেটে নিবেন যেন সরিষা বাটার মত দেখতে হয়। এরপর একটি পরিষ্কার পাত্রে দুই চা চামচ শিমুল মূলের মিশ্রণ নিবেন।
এর সাথে খাঁটি মধু দুই চা চামচ মিশ্রণ করবেন। এরপর এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেয়ে নিবেন। এভাবে খেলে আপনার শরীরে বেশি উপকার দেখা দিবে কেননা দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মধুতে রয়েছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন। এইজন্য একজন মানুষের শারীরিক দুর্বলতাকে দূর করতে।
এই নিয়মটি মেনে চললে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে যাবে। অথবা আপনারা শিমুলের পাউডার ও খেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় নিজেরাই ছোট ছোট শিমুল মূল সংগ্রহ করে। ছোট ছোট টুকরো করে। রোদে শুকিয়ে নিজেরাই পাউডার বানিয়ে রেখে দেওয়া। এরপর প্রতিদিন এক চামচ শিমুল মূলের পাউডার
আরও পড়ুনঃ মধু এবং কালিজিরা খাওয়ার উপকারিতা।
এবং এর সাথে এক গ্লাস গরম দুধ এবং দুই চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সেবন করুন। এভাবে ৩০ থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত নিয়মিত খেলে ভালো একটি ফলাফল দেখতে পারবেন। অনেকেরই এই পাউডার বা চূর্ণ খেলে পেটের সমস্যা হয়। তারা শুধুমাত্র শিমুল মূলের পানি খেলে একই রকম উপকার পাবেন।
প্রতিদিন ঘুমানোর পূর্বে যদি খান তাহলে আপনার শরীরের পক্ষে অনেক ভালো। আপনি চাইলে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। আরেকটি কথা এটা একেবারে প্রাকৃতিক হওয়ার কারণে এর ফলাফল আসতে কিছু দিন দেরি হতে পারে তাই ধৈর্য হারাবেন না নিয়মিত সেবন করুন এবং সমস্যাগুলো দূর করুন।
অনেক সময় রোগীর প্রকারভেদে শুধুমাত্র শিমুল মূল খেলে হয় না এর সাথে বিভিন্ন ঔষধ সেবন করতে হবে।
শিমুল মুলের দাম এবং কোথায় পাওয়া যায়
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিকভাবে কিন্তু শিমুলের মূল মানুষ জমিতে চাষ করে থাকে। বর্তমান সময়ে এর বাজার চাহিদা বিপুল পরিমাণে হওয়ায় অনেক দাম দিয়ে মানুষকে কিনতে হয়। একজন কৃষক সঠিক সাইজের শিমুল মূল প্রতি মন ৩৫০০ টাকা হিসেবে বিক্রি করে। তবে এগুলো খুচরা পর্যায়ে যেতে অনেক দাম বৃদ্ধি পেয়ে যায়।
আপনার এগুলো যদি একান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার নিকটস্থ কোন ভেষজ ঔষধের দোকানে গেলে এটি পেয়ে যাবেন। তবে খুচরা হিসেবে কিনতে গেলে আপনাকে প্রতিপিস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হতে পারে। এগুলোর দাম অনেক পরিমাণে হওয়ার ফলে যারা শিমুল মূলের পাউডার বিক্রি করে।
তারা কচি মুলের সাথে শক্তমূল গুলো মিশ্রণ করে পাউডার বানাই এবং বিক্রি করে। সেটা কিন্তু আমাদের শরীরে খুব একটা কাজ করে না। যে সকল অনলাইন কেনা বেচার ওয়েবসাইট রয়েছে যেমন দারাজ, ইভালি এগুলোতে খোঁজাখুঁজি করলে আপনি খুব অল্প দামের মধ্যে শিমুল মুল পেয়ে যাবেন।
শিমুলের মূল কাঁচা খেলে কি হয় - শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটিতে আপনাদের কাঁচা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। এখান থেকে কোন সঠিক তথ্য জানতে পারলে বা শিখতে পারলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে কখনোই ভুলবেন না।
আর এমন নিত্য নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইটে প্রতিদিন চোখ রাখবেন। যা আপনাদের নিত্যদিনের অজানা তথ্যগুলো জানতে অনেকটা সাহায্য করবে।
এস এইচ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url