প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগী কি কি খাবার খাবে - খাদ্য তালিকা
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকাআসসালামু আলাইকুম, আপনি কি পেনক্রিয়াটাইটিস রুগীর খাদ্য তালিকা খুঁজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর জানতে পারেননি। তাহলে আপনি এখন একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন এখানে প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগী কি কি খাবার খাবে এবং এর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে যে সকল প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগী রয়েছে তারা তাদের খাদ্য তালিকা সর্বপ্রথম নির্ধারণ করে থাকে। এর জন্য প্রয়োজন হবে সঠিক তথ্যের। যে সকল মানুষেরা সঠিক তথ্য খোঁজেন তারাই শুধুমাত্র আমার এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়বেন।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - মূলভাব
বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ মানুষ প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে রয়েছে। এটি এমন একটি মারাত্মক রোগ যা আমাদের শরীরকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। যা আমাদের জীবন চলাচল করতে আরো সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। এই অসুখটি হওয়ার কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে এবং সুস্থ হওয়ারও কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
অনেক টাকার ঔষধ খাওয়ার পরেও তাদের এই সমস্যাটি সমাধান হতে অনেক সময় লাগে। এর মূল কারণ হচ্ছে সঠিক নিয়মে খাবার না খাওয়া এবং যে সকল খাবার এই অসুখের জন্য দায়ী সেগুলো বর্জন না করা। প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ থেকে বাঁচতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে এর খাদ্য তালিকা নিশ্চিত করতে হবে।
ইতিপূর্বে আপনি অন্যান্য জায়গায় দেখেছেন প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকা। কিন্তু আমি আপনাদেরকে এখন যে সকল খাদ্য তালিকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব এগুলো একেবারে সার্টিফাইড ডাক্তার দ্বারা পরিক্ষিত খাবার। আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীরা কি কি খাবার খাবেন প্রতিদিন।
এবং কি কি খাবার বর্জন করে চলবেন যে খাবারগুলো এই রোগীর জন্য অনেক মারাত্মক। তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় অযথা নষ্ট না করে আমরা মূল আলোচনার দিকে ফিরে যাই।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ কাকে বলে
প্যানক্রিয়েটাইটিস হচ্ছে একটি প্যানক্রিস গ্ল্যান্ড রয়েছে মানুষের দেহের। যা আমাদের দেহের নিচের অংশে থাকে। যা আমাদের পাকস্থলির সাইটে একটি গোলাকার অংশে অবস্থান করে। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যাটি দেখা দেয় হয়তোবা খাবারের জন্য কিংবা কোন অসুখের জন্য।
আরও পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর কাপে জানুন।
পেটের ভিতরে যখন এই অংশটিতে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়। তখন এটাকে প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ বলা হয়। অনেক ডাক্তারেরাই বলে প্রায় ক্যান্সারের কাছাকাছি এই রোগটি আকার ধারণ করতে পারে।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ হওয়ার লক্ষণ
যে সকল মানুষদের প্রতিনিয়ত বেশি বেশি জর দেখা দেয়। এর পাশাপাশি বমি হয়। এবং অতিরিক্ত হারে পেট ব্যাথা করে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নেওয়া। কেননা এই লক্ষণ গুলো প্যানক্রিয়েটাইটিস রোগ হওয়ার। তাই বড় কিছু সমস্যা হওয়ার পূর্বেই সমাধান করে নেওয়া সবচেয়ে ভালো।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
প্রত্যেকটি অসুখের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এবং বিভিন্ন উপায়ে উক্ত অসুখটি ভালো করার চেষ্টা করা হয় এবং ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয় ডাক্তারেরা। তবে এই পেনক্রিয়াটাইটিস রোগটি সুস্থ করার ক্ষেত্রে আপনার কতটুকু ভূমিকা রয়েছে এটা কি আপনি জানেন। আপনার কিছু খারাপ অভ্যাস বাদ দেওয়ার ফলে।
এই সমস্যাটি থেকে সমাধান পেয়ে যেতে পারেন খুব সহজেই। এমন কিছু অভ্যাস হয়েছে যা আপনার এই ওষুধটিকে আরো বেশি বৃদ্ধি করে ্দেয়। যারা প্রচুর পরিমাণে চিনি খায় তাদের জন্য এই রোগটি ভালো করা খুব একটা সহজ হবে না। কারণ চিনিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পদার্থ যা এই রোগটিকে আরো বেশি বৃদ্ধি করে দেয়।
এর পাশাপাশি যারা কফি চা এগুলো খান এগুলো এখনই নিজের জীবন থেকে বাদ দিয়ে দিন। ভালোভাবে খেয়াল করে দেখবেন যে সকল মানুষ কখনো ব্যায়াম করেনা দৌড়াদৌড়ি করে না এবং হাঁটাচলা করে না তাদের এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়। তাই আপনার উচিত হবে প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা।
যারা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়বার খাবার খায় তারা প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনবার খাবার খাবেন এবং অভ্যাস হয়ে যাওয়ার পর সকালে একবার খাবেন এবং রাতে একবার খেতে হবে। প্যানক্রিয়েটাইটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দিনে দুইবার খাওয়া উত্তম। গমের তৈরি খাবার খাবেন না যেমন রুটি, পাউরুটি, সুজি এক কথায় বলতে গেলে।
কম থেকে উৎপাদিত যে সকল খাবার রয়েছে এগুলো বর্জন করার চেষ্টা করবেন। প্যানক্রিয়াস আমাদের শরীরে অধিক পরিমাণে এনজাইম সৃষ্টি করে। এই খাবারগুলো যখন খাবেন আপনার দেহের এনজাম গুলো আরো বৃদ্ধি পাবে এবং প্যানক্রিয়েটাইটিস এর রোগটি দিনে দিনে আরো বেড়েই চলবে।
প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা করে ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেন আপনার ডাইরিস্টেন আরো ভালো হবে সম্পূর্ণ হয়। এটি দেহে ব্যবহার করার জন্য নিমের তেল, অলিভ অয়েল এগুলো ব্যবহার করবেন। যে সকল খাবারে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা হয় সেগুলো খাবেন না। হালকা তেলে রান্না করা খাবার খেতে হবে।
যখন সবজি রান্না করবে তখন হালকার সিদ্ধ করে ঝাল এবং লবণ কম ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে সেদ্ধ করা আলু এবং মিষ্টি আলু খেতে পারেন। পাকা পেঁপে খেলে আপনার শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে। প্রতিদিন একটা করে কলা খাওয়ার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ ফলের মধ্যে যেগুলো হালকা মিষ্টি এবং সুগারের পরিমাণ খুব কম সেগুলো ফল খেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ সোনা পাতার উপকারিতা এবং অপকা্রিতা।
চিকেন সুপ এই রোগের জন্য অনেক উপকারী কিন্তু মুরগির চামড়া ব্যবহার করা যাবে না কারণ চামড়াতে অধিক পরিমাণে চর্বি থাকে। পরিমাণ মতো সাদা পানি খাবেন। চিনি ছাড়া লেবুর শরবত। গরু এবং খাসির মাংস বর্জন করবেন। দুধের সর এবং টক দই। সবজির মধ্যে রয়েছে যেমন পালং শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া ,লাউ এগুলো খেতে পারেন।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীরা যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন
সর্বপ্রথম আপনাদেরকে মাথায় রাখতে হবে যে সকল খাবারে অতিরিক্ত পরিমাণে তেল ব্যবহার করা হয় এগুলো বর্জন করে চলবেন। রাস্তার পাশের খোলা খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের চপ , বার্গার ,পিজা এগুলো পরিহার করবেন। খাবারে কখনো সরিষার তেল ব্যবহার করবেন না কেননা এই তুলে অধিক পরিমাণে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে।
যা প্যানক্রিয়েটাইটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। অ্যালকোহল জাতীয় কোন খাবার খাওয়া যাবে না। যদিও বা ভুল করে খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার দেহের ভিতরে যাওয়ার পর প্যানক্রিয়াসিস এই জায়গায় যাওয়ার পর এমন মারাত্মক আকারে ব্যাথা শুরু হবে এর জন্য আপনাকে আই সি ইউ তে ভর্তি করা লাগতে পারে।
যে সকল খাবারে অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করা হয় এগুলো আপনি ভুলেও খাবেন না। আপনার উচিত হবে দিনে দুইবার খাওয়া এবং অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া। খাবারের তালিকায় কম তেল ব্যবহার কিছু খাবার এবং হালকা সেদ্ধ করা সবজি খাওয়া।
প্যানক্রিয়াসিসকে যত আপনি আরাম দিতে পারবেন আপনার সমস্যা তত কম হবে। যখনই একটু পর পর কিছু খাবেন খাবারগুলো নির্দিষ্ট আকারে নিয়ে আসতে প্যানক্রিয়াসিসের অনেক কষ্ট হয় এর জন্য আপনার পেটে সমস্যা দেখা দেয়।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ হওয়ার কারণ
আমাদের দেশে প্রথমত যে সকল মানুষের পিত্তথলিতে পাথর হয়। সেই সকল মানুষের মধ্যে শতকরা প্রায় .৬০ ভাগ মানুষের এই প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগটি দেখা দেয়। যারা প্রতিদিন অতিরিক্ত আকারে অ্যালকোহল অর্থাৎ মদ খায় তাদের এই রোগটি দেখা দেয়। কারণ এলকোহলে অতিরিক্ত পরিমাণে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়।
যা আমাদের পাকস্থলীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ইনফেকশনের সৃষ্টি করে। রক্তের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি থাকার কারণেও এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শতকরা 90% লোক ধূমপান করে ধূমপান কিন্তু এ রোগের অনেক বড় একটি কারন। অনেক সময় দেখা যায় যাদের জন্মগত কিছু সমস্যা থাকার কারণে হয়ে থাকে।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগের লক্ষণ দেখার পর করণীয়
আপনাদের পেটে যখনই কোন সমস্যা দেখা দিবে তখনই অবশ্যই উচিত কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। শুধুমাত্র পেটে ব্যথা হলে কিন্তু আসলে প্যানক্রিয়াটাইটিস হয় না। এটি রিসিভ করার জন্য আপনাকে কোন হসপিটালে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করার পর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনাদেরকে বলা হবে যে আপনার প্যানক্রাইটিস রোগ হয়েছে কি হয় নাই।
প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর গুলো জানতে পেরেছেন। এমন নিত্য নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চাইলে আপনাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন চোখ রাখতে পারেন।
প্রতিদিনের এমন তথ্য কিন্তু আপনার নিত্যদিনের অজানা তথ্যগুলো জানতে সাহায্য করবে। অন্যকে সাহায্য করতে চাইলে আমার এই আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিন।
এস এইচ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url