অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম (নতুন আপডেট)
মোবাইল দিয়ে পুরনো দলিল বের করুন মাত্র ৫ মিনিটেআসসালামু আলাইকুম, আপনি কি অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম খুজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরটি জানতে পারেন নি। তাহলে আপনি এখন একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন এখানে অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম বিস্তারিত বলা হয়েছে।
আমি বেশি দিন ধরে খেয়াল করে দেখছি এই মানুষ অনলাইনে ঘুমিয়ে রেকর্ড বের করার নিয়ম জানতে চায়। তাদেরকে সঠিক তথ্য জানানোর উদ্দেশ্যে এই ব্লগটি তৈরি করা। সকল তথ্য জানতে চাইলে মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন আর্টিকেল পড়ুন।
অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম - মূলভাব
বর্তমান সময়ে যাদের জমি রয়েছে তাদের জমির রেকর্ড বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিভিন্ন সময় আমরা দেখতে পাই কারোর জমির দলিল এবং জমির রেকর্ড ঠিক থাকে না। হয়তো বা কোথাও হারিয়ে যায় কিংবা অবহেলার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে কোন জরুরী দরকারের সময় অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
আরও পড়ুনঃ পুরনো জমির দলিল ডাউনলোড বাংলাদেশ।
এখন থেকে আর আপনাদেরকে জমির রেকর্ড যদি হারিয়ে যায় কিংবা ভুলে যান তাহলে খুব সহজেই অনলাইন এর মাধ্যমে বের করতে পারবেন। এর পাশাপাশি আপনার জমির দলিল এবং জমি সংক্রান্ত যত ধরনের তথ্য প্রয়োজন হবে সবকিছু আপনি অনলাইনের মাধ্যমে মাত্র পাঁচ মিনিটে বের করতে পারবেন।
একজন জমি ওয়ালা ব্যক্তির কাছে এই বিষয়টি অনেক খুশির। কেননা বিভিন্ন কারণে সমস্যা হলেও কিছু সময়ের মধ্যে এই জমি দলিলটি বের করতে পারবে। আমরা দেখে থাকি বাবার জমি নিয়ে ছেলেরা অনেক ঝামেলা সৃষ্টি করে। হয়তোবা বড় ছেলের কাছে জমির দলিল রয়েছে এবং অন্যান্য ছেলেদের জমির দলিল দিতে চায় না।
এখন তারা সমস্যা সৃষ্টি না করে কিছু সময়ের মধ্যে অনলাইন থেকে জমির দলিল এবং রেকর্ড বের করতে পারবে এবং এই জমিটির মালিক কে রয়েছে সেগুলো বিস্তারিত বোঝা যাবে। তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আমরা মূল আলোচনার দিকে ফিরে যাই।
জমির রেকর্ড কাকে বলে
মনে করুন একটি অঞ্চলে আপনার এক শতক জমি রয়েছে। জমিটি যে আপনার এটি প্রমাণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সনদপত্র প্রদান করা হয় অর্থাৎ আমরা যে তাকে বাংলা ভাষায় বলি জমির দলিল। জমির দলিলে উক্ত স্থানের যত ধরনের জমি রয়েছে এবং সর্বমোট যতগুলো মালিক রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ হেবা দলিল বাতিল করার সহজ উপায়।
তার মধ্যে আপনার জমির দলিল কোনটা এবং আপনার নামে একটি ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে তাকে মূলত জমির রেকর্ড বলা হয়। এগুলো মূলত গ্রামে বেশিরভাগ দেখা যায়। কিন্তু শহরে বেশি জমি কেনা বেচা না হওয়ার কারণে তারা এ বিষয়ে কতটা ও বেশি কিছু জানেনা।
যে ব্যক্তির একটু জমি রয়েছে তার জমির রেকর্ড কি এবং জমির দলিল কাকে বলে জানা অবশ্যই জরুরী।
অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম
বর্তমানে আপনি চাইলে ঘরে বসে জেনে নিতে পারবেন কোন মৌজায় আপনার নামে কতটুকু জমি রেকর্ড করা হয়েছে। আপনি যদি জানতে চান কোন মৌজাই আপনার নামে জমে রয়েছে এবং কতটুকু রয়েছে। এবং আপনি যদি সেই খতিয়ানটি বের করতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
অবশ্যই আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন। বর্তমানে ভূমি সেকশনটি কিন্তু ডিজিটাল করা হয়েছে। যার কারণে এ কাজগুলো ঘরে বসে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমেই করা যাচ্ছে। এই কাজটি করার জন্য কিছু ধাপ রয়েছে ধাপগুলো হচ্ছে -
প্রথম ধাপঃ
প্রথমে চলে যাবেন আপনার মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার থেকে গুগল ক্রোম ব্রাউজারে। এরপর সার্চ অপশনে গিয়ে সার্চ করবেন e poscha লিখে। এটা লিখে যখন সার্চ করবেন তখন আপনার সঙ্গে অনেকগুলো অপশন চলে আসবে।
তার মধ্যে থেকে সবার উপরে যেই ওয়েবসাইটটি আছে ওই ওয়েবসাইটের মধ্যেই আপনার সকল কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। নিচের ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করলে আপনার কাজ সঠিক হবে না। এবার সবার উপরের ওয়েবসাইটটিতে একটি ক্লিক করবেন। তারপর আপনাদেরকে আরও একটি পেজে নিয়ে চলে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ
দ্বিতীয় তো আপনি দেখতে পারবেন আপনার সামনে অনেকগুলো অপশন চলে আসছে। এখান থেকে আপনার কাঙ্খিত অপশনে চলে যাবেন। এখানে প্রথমেই লেখা রয়েছে নির্দেশিকা। তারপর লেখা রয়েছে সার্ভে ক্ষতিয়ান। এরপর নাম জারি খতিয়ান এর পাশাপাশি মৌজা ম্যাপ এবং আবেদনের অবস্থা। আমরা যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে জমি রেকর্ড বের করতে চাই।
এর জন্য আমাদেরকে সার্ভে খতিয়ান অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখন আপনার মনে যদি সন্দেহ থাকে যে যে কোন মজাই কিন্তু আমার নামে খতিয়ান থাকতে পারে। এটা যদি জানতে চান তাহলে খুব সহজেই আপনি জানতে পারবেন। এটার জন্য আলাদাভাবে নাম জারি খতিয়ানটির অপশন ব্যবহার করতে হবে।
তৃতীয় ধাপঃ
তৃতীয় ধাপে আপনারা একটি ছকের মতো দেখতে পারবেন এবং উপরে লেখা রয়েছে সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান। নিচের দিকে আসলে দেখতে পারবেন লিখা রয়েছে বিভাগ। আপনি বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের মধ্যে যে বিভাগে বসবাস করেন কিংবা যেখানে আপনার জমি রয়েছে ওই বিভাগটি নির্বাচন করে দিবেন।
এরপর জেলা অবশ্যই আপনার জমিটি যে জেলায় অবস্থিত ওই জেলাটি সঠিক টি লিখবেন। যখনই জেলা নির্বাচন করবেন এরপর ওই জেলার অন্তর্ভুক্ত যতগুলো উপজেলা রয়েছে সবকিছু আপনার সামনে চলে আসবে। এখান থেকে আপনার কাঙ্খিত উপজেলাটি বেছে নিবেন।
আরও পড়ুনঃ খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম।
উক্ত উপজেলায় যত ধরনের খতিয়ানের ধরন রয়েছে সবগুলো আপনার সামনে আসবে। এখন আপনি যেই ধরনের খতিয়ানটি ডাউনলোড করবেন তার ওপর একটি ক্লিক করবেন। এবার আপনাকে নির্বাচন করতে হবে মৌজা আপনি যেই মৌজা নিতে চাইবেন সেখানে একটি ক্লিক করবেন।
তো আপনারা এখানে দেখতে পাচ্ছেন এই মৌজাতে কার কার নামে খতিয়ান রয়েছে সবগুলো আপনার সামনে চলে এসেছে। এবার আপনার নামে যে খতিয়ান রয়েছে সেগুলো আপনাকে ভালোভাবে খুজে বের করতে হবে। যদি আপনার নামে কোন খতিয়ান থাকে তাহলে অবশ্যই দেখতে পারবে।
চতুর্থ ধাপঃ
এরপর আপনার সামনে আরো একটি পেজ চলে আসবে সেখানে লেখা রয়েছে খতিয়ান নাম্বার আপনার জমির দাগ নাম্বার। এর পাশাপাশি রয়েছে বিস্তারিত। বিস্তারিত যদি ক্লিক করেন তাহলে আপনার সামনে উত্তর জমির ম্যাপ সহ জমির দলিল চলে আসবে। ডাউনলোড করতে চান তাহলে ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে।
পি ডি এফ ফাইল অনুযায়ী সেভ করে নিবেন আপনার মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে। তারপর আপনার নিকটস্থ কোন কম্পিউটারের দোকানে যাবেন এবং দলিলটি বের করে নিবেন। আপনি এই উপায়ে মাত্র পাঁচ মিনিটে অনলাইন থেকে আপনার জমির রেকর্ড বের করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ জমি খারিজ করতে কি কি লাগে জানুন।
এতক্ষণ আপনাদেরকে সার্ভে খতিয়ান কিভাবে বের করতে হয় এগুলো বুঝালাম। এখন যদি নামজারিখতিয়ান বের করতে চান তাহলে একইভাবে আপনাকে এই কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে। কাজগুলো সম্পূর্ণভাবে করার পর আপনাকে রেকর্ড বের করার জন্য কিন্তু আবেদন করতে হবে।
আবেদন করতে চাইলে নিচে লেখা রয়েছে খতিয়ান আবেদন ওইখানে ক্লিক করবেন এবং অনলাইন পেমেন্ট অর্থাৎ বিকাশ, নগদ এবং রকেটের মাধ্যমে ১০০ টাকা প্রদানের মাধ্যমে মাত্র কিছু সময়ের মধ্যেই উক্ত জমির রেকর্ড বের করতে পারবেন। আবেদন করার পর আপনাকে ডাকযোগে একজন পিয়ন এসে আপনার খতিয়ানটি আপনাকে বুঝিয়ে দিবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এখানে সার্চ করার সময় একটা বিষয় মাথায় রাখবেন। এখানে কিন্তু খতিয়ানের ধরন রয়েছে। একেক মৌজাতে একেক ধরনের রেকর্ড তৈরি করা হয়। সুতরাং খতিয়ানের ধরন জানলে খুব সহজেই আপনি আমার শেখানো পদ্ধতিতে যেকোনো জমির রেকর্ড বের করতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার সঠিক নিয়ম জানানোর চেষ্টা করেছি। এখান থেকে যদি কোন সঠিক তথ্য জানতে পারেন বা শিখতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে কখনোই ভুলবেন না।
আপনি যদি এমন নিত্য নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটের চোখ রাখবেন। এখানে এমন তথ্য শেয়ার করা হয় যা আপনার নিত্যদিনের অজানা তথ্য জানতে সাহায্য করবে।
এস এইচ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url