এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - নির্দিষ্ট সময়ে ফলাফল
এলার্জির দূর করার ঘরোয়া উপায়আসসালামু আলাইকুম, আপনি কি অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় খুজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরটি জানতে পারেন নি। তাহলে আপনার আর চিন্তা করার কোনো কারণ নেই কেননা এখানে এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় বিস্তারিত বলা হয়েছে। তাই আপনার সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
বর্তমান সময়ে এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় বাংলাদেশের প্রায় ৩০% লোকজন খুঁজে থাকেন। তাদের কথা চিন্তা করে মূলত এমন কিছু তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এটি সম্পূর্ণ দেখার পর আপনি এলোভেরা ব্যবহার করতে বেশি আগ্রহী হবেন।
এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - মূলভাব
যারা আমার আর্টিকেলটি দেশ থেকে এবং দেশের বাইরে থেকে পড়ছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি প্রায় প্রত্যেকটি মানুষের সমস্যা হচ্ছে নিজের মুখের কালো দাগ এবং রোদে পুড়ে যাওয়া। অনেক সময় আমরা খেয়াল করে দেখি আমাদের অনেকেরই মুখের উপর কিছু ছোট ছোট বের হয় এবং তৈলাক্ত অনুভব হয়।
এটি কমানোর জন্য অনেকে রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের দেশি এবং বিদেশি পণ্য ব্যবহার করে। কিছুদিন আগে একটি প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে একটি মহিলা নিজে ফর্সা হওয়ার জন্য একটি পাকিস্তানি ক্রিম ব্যবহার করেছে এর ফলে পরবর্তীতে তার মুখের সকল কিছু পুড়ে গিয়েছে এবং অনেক বড় ক্ষতর সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা।
তাই আমাদের উচিত কোন কেমিক্যাল যুক্ত অন্য আমাদের মুখে ব্যবহার করা একদমই ঠিক না। একেবারে ঘরোয়া উপায়ে এবং প্রাকৃতিক জিনিসপত্র দিয়ে আমাদের মুখের পরিচর্যা করতে হবে। তাছাড়া যদি কোন কেমিক্যাল গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার করি তাহলে আমাদের মুখের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
আজকে আমি আপনাদেরকে এমন কিছু কথা বলবো যার মাধ্যমে মাত্র ৩০ মিনিট ব্যবহার করলে আপনার ত্বক আরো আগের চেয়ে উজ্জ্বল দেখাবে। এবং প্রতিনিয়ত যদি ভালোভাবে ব্যবহার করেন তাহলে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে আপনি একটি বড় পার্থক্য দেখতে পা্বেন।
তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় অযথা নষ্ট না করে আমরা মূল আলোচনার দিকে ফিরে যাই।
এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
অনেকে রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত নিজের ত্বকে এলোভেরা ব্যবহার করে। সবাই কিন্তু সঠিক নিয়মে এটি ব্যবহার করতে পারেনা এর জন্য কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেখতে পারেনা। আমার দেখানোর নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনি ৭ থেকে ১০ দিন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকে একটি অন্যরকম পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
যতদিন ব্যবহার করবেন আস্তে আস্তে আপনার ত্বকের যত কালো দাগ রয়েছে পূরণ রয়েছে এবং উঁচু নিচু জায়গা রয়েছে সব কিছু একেবারে স্মুথ করে তুলবে। প্রথমে আপনাদেরকে একটি এলোভেরা পাতা নিতে হবে যদি অ্যালোভেরা পাতা না থাকে তাহলে বাজার থেকে এলোভেরা কিনে নিয়ে আসবেন।
পাতাটি দুইভাবে কেটে নেওয়ার পর একটি কাটা চামচ ব্যবহার করে ভেতরের সাদা থকথকে অংশটি ভালোভাবে বের করে নিবেন। এর সাথে তিন চামচ পরিমাণ চালের গুড়া নিবেন। চালের গুড়াতে অনেক পরিমাণে এন্টি অক্সিজেন রয়েছে যার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। আপনার বাড়িতে যদি কাঁচা হলুদ থাকে তাহলে একটু কাঁচা হলুদ বাটা নিবেন।
আর কাঁচা হলুদ যদি না থাকে তাহলে বাজার থেকে কিনে আনা হলুদের পাউডার ১ চা চামচ। তিনটিকে অবশ্যই ভালোভাবে মিশ্রণ করে নিবেন। মিশ্রণ করার শেষে আপনাদেরকে একটু গোলাপ জল ব্যবহার করতে হবে। তবে তাড়াতাড়ি যদি এর ফলাফল দেখতে চান তাহলে আপনাকে গাছের এলোভেরা পাতা নিতে হবে 2 ইঞ্চি পরিমাণ এক টুকরো।
এরপর তিন চামচ চালের গুড়া। এক চা চামচ হলুদ। এর সাথে একটু গোলাপ জল। এরপর আপনাদেরকে দুই থেকে চার মিনিট আপনাদের ত্বকে অর্থাৎ যেখানে কালো দাগ রয়েছে সেখানে ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর মাত্র একবার ব্যবহার করলে এর পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
আপনার ত্বকে থাকা যত মরা চামড়া কালো দাগ ব্রণ এবং তৈলাক্ত ভাব ছিল সবগুলো আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে। এরপর ঠান্ডা পানি দ্বারা আপনার ত্বকটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। দ্বিতীয় ধাপের জন্য আপনাদেরকে আবারো এলোভেরা পাতা নিতে হবে। একইভাবে কাটা চামচ ব্যবহার করে ছোট ছোট টুকরা করতে হবে।
যেন এলোভেরা জুস আমাদের ত্বকে ভালোভাবে প্রবেশ করতে পারে। এরপর এর উপর দিবেন একচা চামচ কফি পাউডার। কফির মধ্যে ভরপুর এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। কফির মধ্যে থাকা ক্যাফিন আমাদের ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ও যে ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ত্বকে ব্রণ এর সৃষ্টি হয় এগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃচোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়।
এর ফলে আমাদের ত্বকে ব্রণ কম সৃষ্টি হয়। এবারের মধ্যে যুক্ত করতে হবে সামান্য গুড়া দুধ। এরপর কয়েক ফোটা লেবুর রস নিয়ে ভালোভাবে চামচের সাহায্যে মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপর আগের মতই তিন থেকে চার মিনিট ভালোভাবে ত্বকে লাগিয়ে নিতে হবে। তবে যাদের লেবুতে এলার্জি রয়েছে তারা লেবু ছাড়া এ কাজটি করতে পারবেন।
লেবুর পরিবর্তে আপনারা টমেটো, কমলালেবুর খোসার গুড়ো এবং টক দইও ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবেই যদি প্রতিনিয়ত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন। এই দুই স্টেপ ফলো করে যদি কাজ করতে পারেন। তাহলে এই উপাদানগুলো যে সকল উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আপনার ত্বকের সাথে কাজ করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল এবং মসৃণ করে তুলবে।
এলোভেরা ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম
প্রথমেই একটি এলোভেরা পাতা সংগ্রহ করে নিবেন। এরপর আপনার পরিমাণ মতো টুকরা করে কেটে নিবেন। কাটার পর দেখতে পারবেন এক ধরনের হলুদ কালার পদার্থ বের হচ্ছে। এগুলো একটি টিস্যু ব্যবহার করে পরিষ্কার করে নিবেন। হলুদ পদার্থগুলো কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর এর ফলে আমাদের শরীরে দাগ হতে পারে।
তারপর একটি বাটি নিতে হবে বাটির মধ্যে ৫০০ মিলি পরিমাণ ঠান্ডা পানি নিবেন। এরপর এলোভেরা 10 থেকে 30 মিনিট পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখবেন। এর ফলে যাদের এলোভেরাতে এলার্জি রয়েছে এগুলো আর দেখা যাবে না। যাদের অতিরিক্ত পরিমাণে এলার্জি রয়েছে তারা এলোভেরা ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন।
আরও পড়ুনঃ পাথরকুচি পাতার গুনাগুন এবং ক্ষতিকর দিক।
তারপর এলোভেরার পাতার মাঝখানের সাদা অংশটি নিবেন এবং সবুজ অংশগুলো বাদ দিয়ে দিবেন। একটি চিরুনির সাহায্যে ভিতরের অংশটি ভালোভাবে বের করে নিবেন। সম্পূর্ণ জেলটা বের করার পর আপনি সরাসরি মুখে লাগাতে পারবেন এটা আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। কিন্তু তৎক্ষণাৎ কোন পরিবর্তন দেখতে পারবেন না।
এর জন্য এলোভেরা সাথে একটু কাঁচা দুধ যুক্ত করতে হবে। এরপর আপনার হাতের সাহায্যে ভালোভাবে পেস্ট করে নিবেন। এরপর আপনার ত্বক ভালোভাবে ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিবেন। উক্ত অ্যালোভেরাটি আপনার সম্পূর্ণ ত্বকে লাগিয়ে দিবেন এবং 10 মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।
ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। একবার ব্যবহারে এর ফলাফল আপনি দেখতে পারবেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনি আগের চেয়ে একটু উজ্জ্বল হয়ে উঠবেন। এবং ত্বকের সমস্যাগুলো আস্তে আস্তে সব দূর হয়ে যাবে। আমার দেখানোর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাবেন।
এলোভেরা ব্যবহারের উপকারিতা
এলোভেরা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ (বিটা কেরোটিন), ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই এর পাশাপাশি ফলিক এসিড এবং কোলিন সহ অল্প পরিমাণে খনিজ থাকে এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা আমাদের ত্বকে তৈরি হওয়া খারাপ ব্যক্তিদের সাথে লড়াই করে। এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে।
পিম্পলস দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের ত্বকে জমে থাকা অতিরিক্ত তৈলাক্তের কারণে যে ব্রণগুলো তৈরি হয় এগুলো দূর করতে সাহায্য করে। দিনে দুইবার এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের ব্রণগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক উপকারী।
এলোভেরা জেল ত্বককে হাইড্রেট এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি পোড়া ক্ষত এবং দাগ দূর করতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এগুলো ছাড়াও ত্বকের সংক্রমণ এবং নিরাময় করতে অনেকটাই সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যেটা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই অনেক বেশি চিন্তা করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ চোখ লাল কমানোর ঘরোয়া উপায়।
এটি থেকে বাঁচার জন্য আপনি যদি প্রতিদিন এলোভেরার শরবত পান করেন তাহলে এ সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন। যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাদের চিন্তা করার কারণ নেই কেননা ওজন কমানোর জন্য অ্যালোভেরার কোন বিকল্প নাই। এলোভেরা তে থাকা পদার্থগুলো আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলাতে সাহায্য করে।
এলোভেরা একটি প্রকৃতি উপাদান হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে যত ধরনের রোগ হয় যদি আমরা প্রতিদিন এলোভেরা খেতে পারি তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল থাকা ভালো কিন্তু অতিরিক্ত যাদের কোলেস্টেরল তারা অনেক সমস্যাই ভোগেন।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য এলোভেরার শরবত খেতে পারেন। লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অনেক মহিলারা রয়েছে যারা অ্যানিমিয়াতে ভোগে তাই এখন ডাক্তারেরা পরামর্শ দেয় যাদের অ্যানিমিয়া রয়েছে তারা যেন প্রতিদিন এলোভেরা শরবত খায়।
এলোভেরা ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক
কোন জিনিসের যেমন ভাল দিক রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিক রয়েছে। ঠিক তেমনভাবে এই এলোভেরা ও এর ব্যতিক্রম কিছু না। প্রত্যেকটি ডাক্তারেরাই বলে যে বাড়িতে একটি এলোভেরা গাছ লাগানোর কথা। কিন্তু যখন আপনি এটি রস পান করতে চাইবেন। তখন অবশ্যই সর্বপ্রথম আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এটি ব্যবহার করতে হবে।
এলোভেরা পাতায় এমন কিছু পদার্থ রয়েছে যার ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর রস পান করা। বেশি পরিমাণে কখনোই খাওয়া উচিত নয় কেননা আমাদের শরীরের রক্ত অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করে। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের কিডনির অনেক বড় ক্ষতি করে।
যারা গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মহিলা রয়েছে তাদের অবশ্যই উচিত এলাভেরাকে এড়িয়ে চলা। কারণ এটি বাচ্চার জন্য অনেক ক্ষতি সাধন করতে পারে। আপনারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খেতে থাকেন তাহলে ডায়রিয়ার মতো মারাত্মক রোগ দেখা দেবে।
এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন এবং নিয়মমতো খেতে হবে। এটি ব্যবহারের ফলে যদি আপনার অনেক সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সাথে সাথে এলোভেরা ব্যবহার করা বন্ধ করে দিন এবং আপনার নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। এখান থেকে যদি কোন সঠিক তথ্য জানতে পারেন বা শিখতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এমন নিত্য নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন চোখ রাখবেন। এখানে দৈনন্দিন এমন কিছু তথ্য শেয়ার করা হয় যা আপনার প্রতিদিনের কাজকে অনেক সহজ করে তুলবে।
এস এইচ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url